ফেসবুক জীবন, ফেসবুক মরণ

মিজবাহুল জান্নাত তারিন

হিসাববিজ্ঞান বিভাগ | চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় | আগ্রাবাদ, চট্টগ্রাম

মনের সাইটে সংযোগ ক্ষুধার্ত হলেও আবেগের শর্টসার্কিট এই ফেসবুকে প্লাগ লাগিয়ে মাকড়সার মতো বসে থাকি আমরা। টাচ স্ক্রিন ছুঁয়ে ভবঘুরের মতোন ফেসবুকের ওয়ালে ওয়ালে ঘুরে বেড়াই অন্যের জীবনে আগন্তুক হয়ে। এই যে ফেসবুক এত কবি, সংগীতশিল্পী, অভিনেতার জন্ম দিচ্ছে আর অগণিত ভিউ ও শেয়ার হচ্ছে আমরা কি একবারও যাচাই করে দেখছি তার কত শতাংশ আসলেই প্রতিভাবান? ফেসবুকের মতো প্লাটফর্মে ভুয়া খবর, খুনের ঘটনা ও নির্যাতনের দৃশ্য সম্প্রচার বাড়ছে আর নকল আনন্দের চকমকে কিছু লাইকের জন্য বোকা পাব্লিকের মাধ্যমে মূহুর্তেই তা ভাইরাল হচ্ছে। এতে ব্যক্তির চিন্তাশক্তি ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার প্রবণতার সাথে ব্যস্তানুপাতিক হারে কমছে আইকিউ লেভেল। একদিকে বেঁচে থাকার অনিবার্য উপাদান নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চর্চা কমছে অন্যদিকে অন্যের জীবনের কমেন্টবক্সে বাড়ছে ওপিনিয়ন। এ যেন অন্যের সমস্ত কিছুতে নাক গলানোকে বাঙ্গালি কর্তব্য মনে করে। স্পর্শ, আলিঙ্গনের বিকল্প স্বাদ ফেসবুকে মানুষ যেভাবে অভ্যস্ত হয়ে যাচ্ছে সেই অভ্যাস ত্যাগ কি আদৌ সম্ভব? অন্যের জীবন নিয়ে কূটকচালী করা থেকে নিজেকে বিরত রেখে যে সময়টা পাবেন সেটা নিজের জীবন সাজাতে ব্যয় করুন। ফেসবুকে নিজেকে এডিট করে কম্পোর্ট জোন না খুঁজে সত্যিকারের সমপর্কগুলোর যত্ন নিন। ভার্চুয়াল নেটওয়ার্ককে স্মৃতির মালিক না বানিয়ে বাস্তবে নেটওয়ার্কের সুতা বাড়ান। কোনো শিরোনাম দেখে হুটহাট উত্তেজিত না হয়ে নিজের আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করুন। সবশেষে ইনবক্সের সুড়ঙ্গ দিয়ে অন্যের মনের কথা না জেনে যান্ত্রিক জীবন থেকে বেরিয়ে আসুন এবং প্রাকৃতিক পরিবেশে শান্তি খুঁজুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *