শারমিন উদ্দিন | ইডেন মহিলা কলেজ,ঢাকা।
ইটের পর ইট মধ্যে মানুষ কীট” ছোট বেলায় ভাবসম্প্রসারন পড়েছিলাম।প্রযুক্তির কল্যানে আমরা দিন দিন সত্যিই কীটে পরিনত হচ্ছি।জীবন যেন কৃত্রিমতায় জর্জরিত।ঘুম থেকে ওঠা থেকে শুরু করে ঘুমোতে যাওয়া পর্যন্ত আমাদের কোনো নাকোনো ভাবে প্রযুক্তির সংস্পর্শে থাকতেই হয়।সকালের নাস্তা বানানো হয় টোস্টার কিংবা রুটি মেকারের সাহায্যে।এছাড়া রাইস কুকার,প্রেসার কুকার,ব্লেন্ডার ইত্যাদি তো আছেই।নিজে হাতে রান্না করে খাওয়ানোর মধ্যে যে আন্তরিকতা, ভালোবাসা, যত্ন থাকে সেটা আর থাকছে না।থাকছে না হাতেলেখা চিঠিও।দিনকে দিন প্রযুক্তির অতিমাত্রায় উন্নয়নের ফলে ডাক যোগাযোগ ব্যবস্থা বিলুপ্তর পথে।ফেইসবুক, মেসেঞ্জার, ইন্সটাগ্রাম, টুইটার,হোয়াটসঅ্যাপের কল্যাণে ডাক যোগাযোগ ব্যবস্থা অতলেই হারিয়ে যাচ্ছে। হাতে লিখে চিঠি পাঠানোর আর চিঠি পাওয়ার যে আনন্দ সে আনন্দের স্বাদ হয়তো নতুন প্রজন্ম আর পাবে না।
পাবে না গ্রামীন খেলাধুলার স্বাদও। বাচ্চারা এখন ল্যাপটপ কিংবা মোবাইল ফোনের স্ক্রিনে পড়ে থাকছে।গাছে উঠা,খেজুর গাছে হাঁড়ি বাঁধানো,মালা গাধা,মাছ ধরা,ঘুড়ি উড়ানো এসব যেন এখন শুধুই গল্প!ইলেক্ট্রিক ডিভাইস অতিমাত্রায় ব্যবহারের কারণে অল্প বয়সেই নানা রকমের সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। শুধু তাই নয়, প্রযুক্তি আমাদের অলস বানিয়ে দিচ্ছে যার ফলে মানব শরীরে জটিল ও কঠিন রোগ বাসা বাঁধছে। তাই কৃত্রিম পরিবেশে নিজেকে শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ রাখতে নিজের দৈনন্দিন কাজগুলো নিজেকেই করতে হবে, খোলামেলা আলোবাতাসপূর্ণ প্রাকৃতিক পরিবেশে সময় কাটাতে হবে।
বাচ্চাদের যথাসম্ভব আাইটডোর গেম,বই পড়ার প্রতি আগ্রহী করে তুলতে হবে।কৃত্রিমতার ছোঁয়ায় নিরবে,নিভৃতে আমরা অনেক কিছুই হারিয়ে ফেলছি।প্রযুক্তি যেমন আমাদের জীবনকে সহজ করে তুলেছে তেমনি চুপিসারে ক্ষতিও করছে কম না।সময় আমাদের যান্ত্রিক হতে বাধ্য করেছে।এই যান্ত্রিক জনজীবনে একটুখানি প্রশান্তি পেতে সবুজ প্রকৃতির কোনো বিকল্প নেই।যার যেখানে (ছাদ,বারান্দা,উঠোন) যতটুকু জায়গা আছে সেখানেই গাছপালা দিয়ে ভরিয়ে তুলতে হবে।তাহলে যদি একটু প্রশান্তি পাওয়া যায়!প্রশান্তি টাকা দিয়ে কেনা যায় না।অল্প কিছু টাকা বিনিয়োগ করলেই গাছ লাগানো/বাগান করা সম্ভব। এই বিনিয়োগ আপনাকে মানসিক প্রশান্তি দেবে,অবসাদ কমাতে সাহায্য করবে।মনকে করে তুলবে সতেজ,প্রফুল্ল।