শারমিন উদ্দিন | ইডেন মহিলা কলেজ,ঢাকা
আসবাপত্রের সুষম বন্টনআসবাবের উপযোগিতা ও সৌন্দর্য তখনই বৃদ্ধি পায় যখন তা সঠিকভাবে বিন্যাস করা হয়।আসবাব শুধু ক্রয় করলেই হয় না, তা ব্যবহার উপযোগী করার জন্য সুষ্ঠু বিন্যাসও প্রয়োজন।সঠিকভাবে আসবাব বিন্যাস না করলে যেমন চলাফেরায় অসুবিধা হয় তেমনি দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনাও থাকে।
আসবাব বিন্যাসের সময় যেসব বিষয়ের প্রতি খেয়াল না রাখলেই নয় তা হলো
১.কক্ষের ব্যবহার
২.কক্ষের আকার ও আয়তন।
৩.দরজা-জানালার অবস্থাানপ্রথমেই দেখতে হবে কক্ষটি কি কাজে ব্যবহার করা হবে।সে অনুযায়ী আসবাব নির্বাচন ও বিন্যাস করতে হবে।খাবার ঘরের আসবাব কখনো শোবার ঘরে শোভা পায় না। শোবার ঘরে যদি ডাইনিং টেবিল রাখা হয় তাহলে আসবাবের উপযোগিতা ও সৌন্দর্য ম্লান হবে।এতে গৃহে আরামদায়ক ও মনোরম পরিবেশ সৃষ্টি হবে না।তাই যে কক্ষে যেই আসবাব উপযোগী সে কক্ষে সেই আসবাবই বিন্যাস করতে হবে।
আসবাব বিন্যাসে ছন্দ আনতে যা করতে হবেঃ১.আসবাস বিন্যাসের পূর্বে কক্ষের আকার ও আয়তনের দিকে খেয়াল রাখতে হবে।নিচু ছাদযুক্ত ও ছোট ঘরের জন্য তুলনামূলক ছোট আসবাব উপযোগী। অন্যদিকে বড় ঘরের জন্য বড় সাইজের আসবাব বিন্যাস করতে হবে।কেননা ঘরের আকার-আয়তনের সাথে আসবাবের আকার আয়তনের সামঞ্জস্য থাকা জরুরি।
২.ছোট আসবাব কোনাকোনি আকারে বিন্যাস করা যেতে পারে কিন্তু বড় আসবাব সোজাসুজি রাখাই ভালো।
৩.জানালাযুক্ত দেয়ালে ছোট আসবাব এবং জানালা ছাড়া বড় দেয়াল ঘেঁষে বড় আসবাব রাখতে হবে। এতে ঘরের জানালা আড়াল হয়ে যাবে না আর দেখতেও ভালো লাগবে।
৪.ছোট আসবাবের সাথে বড় আসবাবের সমন্বয় করতে হবে।একটা ঘরের সব আসবাব ছোট কিংবা সব আসবাব বড় হলে তা দৃষ্টিনন্দন দেখাবে না।
৫.আসবাবের উপকরণের ধরণ অনুযায়ী আসবাব বিন্যাস করতে হবে।একই উপকরণে তৈরি আসবাব একসাথে রাখতে হবে।যেমনঃযে ঘরে কাঠের আসবাব রাখা হবে সে ঘরে স্টীলের তৈরি আসবাব না রাখা।
৬.মূল প্রবেশপথের কাছাকছি জুতার কেবিনেট রাখতে হবে।এতে জুতা পরতে ও খুলে রাখতে সুবিধা হবে।
বিভিন্ন ঘরে আসবাবপত্র বিন্যাস
শোবার ঘরঃ১.শোবার ঘরে সর্বপ্রথম খাট বিন্যাস করতে হবে।আলোর বিপরীত দিকে খাট স্থাপন করতে হবে। এতে ঘুমানোর সময় চোখে আলো পড়বে না।
২.ড্রসিং টেবিল এমন জায়গায় রাখতে হবে যাতে, ব্যবহারকারীর মুখের উপর যথেষ্ট আলো পড়ে।
৩.খাটের পাশে সাইড টেবিল এবং টেবিলে একটি টেবিল ল্যাম্প রাখা যেতে পারে।
৪.ঘরে জায়গা কম থাকলে অতিরিক্ত আসবাব বাদ দিয়ে শুধু প্রয়োজনীয় আসবাব রাখতে হবে।এতে ঘর খানিকটা খোলামেলা দেখাবে।
বসার ঘরঃ১.বসার ঘরে বড় দেয়াল ঘেঁষে বড় সোফা রাখতে হবে।
২.সোফার সম্মুখভাগে সেন্টার টেবিল রাখতে হবে।
৩.চেয়ার বা সোফার সামনে পা রাখার এবং হাঁটাচলা করার জন্য যথেষ্ট জায়গা রাখতে হবে।
খাবার ঘরঃ১.খাবার ঘর রান্নাঘরের পাশেই রাখতে হবে।
২.খাবার টেবিল দেয়াল ঘেঁষে না রেখে মাঝখানে রাখতে হবে, যাতে টেবিলের সব সাইডের চেয়ার ব্যবহার করা যায়।
৩.খাবার টেবিলে ফলের ঝুড়ি কিংবা ছোট ফুলের টব রাখা যেতে পারে। এটা খাবার ঘরের সৌন্দর্য অনেকখানি বাড়িয়ে দেয়।
রান্নাঘর ঃ১.চুলা জানালার কাছাকাছি রাখতে হবে যেন তাপ আর ধোয়া বাইরে বেরিয়ে যেতে পারে।
২.রান্নাঘরে যেহেতু কাটাকুটির কাজ করা হয় তাই পর্যাপ্ত আলো থাকা প্রয়োজন।তাই আসবাব বিন্যাসের সময় জানালা আড়াল না করে আসবাব বিন্যাস করতে হবে।
৩.রান্নাঘর পরিপাটি রাখার জন্য কাউন্টারের উপরে-নিচে কেবিনেট বানিয়ে নেওয়া ভালো।এতে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র গুছিয়ে রাখা যায়।
সতর্কতাঃ
১.দেয়াল ঘেঁষে আসবাব না রাখাঃ একদম দেয়াল ঘেঁষে আসবাব রাখা যাবে না।।এতে ঘর্ষণের ফলে দেয়ালের রং উঠে যাওয়ার ও দাগ পরার সম্ভাবনা থাকে।
২.আলো বাতাস প্রবেশের সুব্যবস্থা ঃজানালা আড়াল হয় এমনভাবে আসবাব বিন্যাস না করা।এমনভাবে আসবাব বিন্যাস করতে হবে যাতে,আলো বাতাস প্রবেশের পথে বাধা না হয় এবং দরজা জানালা খুলতে অসুবিধা না হয়।
৩.চলাচলঃ দরজা জানালার অবস্থান বিবেচনা করে এমনভাবে আসবাব বিন্যাস করতে হবে যাতে,স্বাভাবিক হাঁটাচলা ও কাজকর্মে বাধা সৃষ্টি না হয়।