বি এন এস

Afia Tahsin Protiva

Published: 25/09/2024

বাইরে কীসের শব্দ আপু?

গোলাগুলির , কোটাবিরোধী আন্দোলন হচ্ছে । আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ গুলি করছে।

  • এতে তো ওরা মারা যাবে…
  • হ্যা, যাবে ।

রিশা, রাহাত বারান্দায় যাবে না একদম বাইরের পরিস্থিতি ভালো না।

আম্মু আমরাও আন্দোলনে যাবো , রাহাত বলল। – না কোনো দরকার নেই

  • কেন দরকার নেই?
    কত ছাত্র মারা গিয়েছে তুমি জানো? ঘরে বসে দোয়া করো আর নামাজ পড়ো যেন সব তাড়াতাড়ি ঠিক হয়ে যায়।
    আম্মুর কথায় শুধু রাহাতের নয় আমারও রাগ উঠেছে । সবাই আন্দোলনে নামলে কাউকেই মার খেতে হত না। কি আর করার ফেসবুকে আপডেট দেখে যাচ্ছি আর মনে মনে দোয়া পড়ছি। রাতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের উপর অনেক নির্যাতন হয়েছে। পুলিশ টিয়ার সেল, গুলি ছুড়েছে। চিন্তা চিন্তায় রাত পার করলাম। ঠিক মতো ঘুম আসে না।

পরেরদিন আমাদের বাসার সামনে দিয়ে মিছিল যেতে দেখে রাহাত আবার যাওয়ার জন্য জেদ ধরে। এই সময় বাসায় দুইজন আন্টি আসে । উনারা আম্মুকে জানায় রাস্তায় অনেক মারামারি হচ্ছে। মারামারি কথা শুনে আম্মু রাহাতকে ধমক দিয়ে বলে, রাস্তায় কি মার খেতে যাবি? ঘরে বসে টিভি দেখ।
রাতে আমি আর রাহাত অনশন করব বলে সিদ্ধান্ত নিলাম। আব্বু-আম্মুকে বললাম আগামীকাল আন্দোলনে যেতে না দিলে আমরা আজ রাতে খাবো না।

“এটা কেমন কথা? এতো কিসের জেদ তোমাদের, তোমরা কেন আন্দোলন করতে যাবে? যাদের তারা দরকার গিয়েছে ধমক দিয়ে” – বলল আব্বু।

আমি বললাম, “আমাদের দরকার নেই, চাকরি আমরা করব না? যারা মারা গেলো তাদের জীবনের বিনিময়েও কি দরকার না আন্দোলন সফল হওয়া?”

আব্বু আম্মু আর কিছু বললেন না ,রাত এগারোটার দিকে আমাদের দুইজনকে ডেকে বললেন ,”আগামীকাল আমরা চারজন আন্দোলন করতে যাবো। তোমরা খেয়ে ঘুমিয়ে পরো । আমরাও তাই করলাম।

পরদিন সকালে আমরা সবাই বিএনএস এ অবস্থান করছি। পুলিশ সবাইকে সরানোর জন্য টিয়ার সেল নিক্ষেপ করা শুরু করে দিয়েছে । আমি আর রাহাত আব্বু – আম্মুর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ি।

  • আপু পুলিশতো গুলি করছে, আমরা এখন কি করব?
  • ভয় পাস না, কিছু হবে না।
    -আমি ভয় পাচ্ছি না, কিন্তু আব্বু আম্মু কোন দিকে গেল?

কথা বলতে বলতেই দেখি পুলিশ আমাদের দিকে গুলি করতে আসছে । রাহাতেকের হাত ধরে দৌড়াতে শুরু করি, হঠাৎ করেই একটা গুলি এসে আমার পায়ে লাগে আর আমি চিৎকার দিয়ে পড়ে যাই।

আপু, আপু কি হলো, রাহাত সবাইকে ডাকাডাকি করতে লাগল, দশ পনেরো জন এসে আমাকে একটা রিকশায় বসিয়ে দিল। রাহাত পাশে বসে আব্বু আম্মুকে ফোন করল। কখন অজ্ঞান হয়ে গেছি জানি না। জ্ঞান ফেরার পর দেখি আমি হাসপাতালে। রাহাত , আব্বু – আম্মু সবাই আছে।

রাহাত আমাকে বলল, “আপু তুমি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠার পর দেখবে এই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সফল হয়ে গিয়েছে ।”

Author details:

Name: Afia Tahsin Protiva

Grade: BAF Shaheen College Kurmitola HSC – 23

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *