Category: Bangla Story
Published: 16/08/2024
রিশা মেয়েটা দেখতে সুন্দর, পড়ালেখায়ও ভালো কিন্তু ভীষণ হিংসুটে ও অহংকারী। তার বাবার অনেক টাকা-পয়সা আছে বলে সবসময় অহংকার করে। ক্লাসের কেউই খুব একটা রিশাকে পছন্দ করে না। রিশার সব থেকে ভালো বান্ধবী নিপা। নিপা তার মতো অহংকারী না। নিপা রিশাকে প্রায়ই বলে এতো বানিয়ে কথা না বলতে কিন্তু সে তার কথা শোনে না।
রিশা বলে আমি পাবলিক বাসে উঠতেই পারি না কি নোংরা! মানুষের ঘামের গন্ধ, এর মধ্যে আমি উঠবো? প্রশ্নই আসে না। আমার পরিবারের একটা স্ট্যান্ডার্ড আছে, আমাকে ঘরের কোনো কাজই করতে হয় না, পাঁচজন কাজের লোক রয়েছে। আমিতো নিজ হাতে ভাত পর্যন্ত খাই না, আম্মু আমাকে খাইয়ে দেয়, আমাদের দুটো গাড়ি রয়েছে, ঢাকায় বাড়ি আছে প্রথম প্রথম সবাই রিশার কথা বিশ্বাস করতো। কিন্তু একদিন আঁচল তাকে বাসে দেখে ফেলে , সাথে ওর মা ছিল। আঁচল জিজ্ঞাসা করে, আন্টি আপনাদের তো গাড়ি আছে তাহলে বাসে কেন?
– আমাদের গাড়ি নেই , একটা রিশার বাবার অফিস থেকে দিয়েছে কাজের জন্য শুধু।
সেদিন থেকে কেউ আর রিশার কথা বিশ্বাস করে না।
কলেজের অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা শুরু হয় ১৪ই মে। ১৫ তারিখ বাংলা ২য় পত্র পরীক্ষা দুপুর ২টা থেকে শুরু হবে বলে ছাত্রছাত্রীরা ১:৩০ টার সময়ই কলেজের সামনে ঢোকার জন্য অপেক্ষা করছিল ।
রিশা একটি স্কেল বের করে তার বান্ধবীদের দেখিয়ে বলল, এটা স্বর্ণের তৈরি, আমার মামা এনেছে বিদেশ থেকে। সবাইকে স্কেলটার দিকে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে থাকতে দেখে রিশা নিজেকে অনেক বড় মাপের কেউ ভেবে ফেলতে লাগল।
সুমা বলল, আমাকে একটু দে হাত দিয়ে ধরে দেখি?
– না, তোর হাতে দেয়া যাবে না, এর মূল্য তুই বুঝবি না।
রিশার কাছ থেকে এভাবে অপমানিত হবে সুমা ভাবতে পারে নি। সুমার পরিবার গরিব বলে এইভাবে বলতে পারল! সুমা কাঁদতে কাঁদতে সেখান থেকে চলে গেল।
কলেজের পাশে একটি রয়েছে জঙ্গলের মতো জায়গা । সেখানে অনেক বানর থাকে।মাঝে মাঝে কলেজের ভেতরেও ঢুকে যায়। আজকে কলেজ গেটের সামনের গাছে বানর বসে আছে।
হঠাৎ করে শিমার হাত থেকে ছো মেড়ে বানরটি স্কেলটি নিয়ে লাফিয়ে গাছে উঠে পরে।
আ- আ- আমার স্কেল! এতোদামি স্কেল…..
– কান্না করিস না রিশা দিয়ে দিবে।
দুই মিনিট পর বানর স্কেলটি নিচে ফেলে দেয়। নিপা গিয়ে স্কেলটি হাতে তুলেই দেখতে পেয়, পায় স্কেলটি নকল, স্বর্ণের নয়, রং করা ছিল উঠে গেছে বানরের আঁচড়ে।
-রিশা তুই কেন সবাইকে মিথ্যে বললি, এটা স্বর্ণের নয়। আবার তুই সুমাকেও অপমান করলি। কাজটা কি তুই ঠিক করলি? রিশা লজ্জায় চুপ করে থাকল। দূর থেকে কিছু ছেলে মেয়ে এসব দেখছিল, তারা রিশাকে কে নিয়ে হাসাহাসি শুরু করে। ঐদিনের পর থেকে রিশা আর মিথ্যে কথা বলে না।
Author details:
Afia Tahsin Protiva
Admission candidate,
BAF Shaheen College, Kurmitola